Menopause মানে কি যৌবনের শেষ বিদায়
আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার সময়Menopause মানে কি যৌবনের শেষ বিদায় আপনি কি এ বিষয়ে জানতে আগ্রহী। তাহলে আজকের আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নারীদের মেনোপজ বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পোস্ট সূচীপত্রঃ Menopause মানে কি যৌবনের শেষ বিদায়
- Menopause মানে কি যৌবনের শেষ বিদায়
- মেনোপজ কি
- মেনোপজ কত বছর বয়সে হয়
- মেনোপজের লক্ষণসমূহ জানুন
- মেনোপজ যে সকল কারণে হয়
- মেনোপজের পরে কি বাচ্চা হয়
- মেনোপজের সময় যৌবনের উপর যে প্রভাব পড়ে
- মেনোপজ পরবর্তী চিকিৎসা
- মেনোপজের পরে নারীদের জীবন যাত্রার পরিবর্তন
- লেখকের শেষ কথা
Menopause মানে কি যৌবনের শেষ বিদায়
সাধারণত মেনোপজ নারীদের জীবনের একটি অন্যতম প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। যেই প্রক্রিয়াটি তাদের একটি বয়স অনুযায়ী তাদের জীবনযাত্রায় ঘটে থাকে। এই সময় মূলত নারীদের হরমোনের পরিবর্তনের কারনে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, যা তাদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। সাধারণত এই সময় নারীদের মাসিক একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়া, তাদের সন্তান প্রজনন ক্ষমতা একেবারে হারিয়ে ফেলা এবং যৌন জীবনে সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ খেজুর খাওয়ার ২০ উপকারিতা ও অপকারিতা
এগুলো মূলত তাদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এক্ষেত্রে আমাদের অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকতে পারে Menopause মানে কি যৌবনের শেষ বিদায় ? এর উত্তর হল না, মেনোপজ মানে যৌবনের শেষ বিদায় না বরং মেনোপজের পরেও শারীরিক মিলন করা যায়, তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। বিশেষ করে এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে মেনোপজের সময় যে ব্যক্তি পার করছেন তার ওপর। এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত নিচে উল্লেখ করা হলো।
মেনোপজ কি
মূলত মেনোপজ হলো একজন নারীর জীবনের প্রাকৃতিক একটি জৈবিক প্রক্রিয়া। যেই প্রক্রিয়াটি মূলত তাদের প্রজনন ক্ষমতা শেষ হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। একটি গড় হিসাবে ধরা হয় যখন একজন নারীর জীবনে মেনোপজের বয়সে একটানা ১২ মাস মাসিক বন্ধ হয়ে যায়, তখনই তাকে মেনোপজ হিসেবে ধরা হয়। এই সময় মূলত তাদের জীবনযাত্রায় বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসে, যেই পরিবর্তনগুলো তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা সঠিকভাবে পরিচালনা করতে বাধাগ্রস্ত প্রদান করতে পারে।
মেনোপজ কত বছর বয়সে হয়
মেনোপজ মূলত নারীদের জীবনের এমন একটি প্রক্রিয়া, যা তাদের নির্দিষ্ট একটি বয়স অনুযায়ী হয়ে থাকে। এটি একেকজনের ক্ষেত্রে একেক বয়সে হতে পারে। তবে বাংলাদেশের গড় হিসাব অনুযায়ী ৪০ থেকে শুরু করে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যেই একজন নারী মেনোপজের সময় অবলম্বন করেন। তবে কিছু কিছু নারীদের ক্ষেত্রে এই বয়সের আগেও মেনপজ শুরু হয়ে যেতে পারে।
.webp)
মেনোপজের লক্ষণসমূহ জানুন
সাধারণত নারীরা যখন মেনোপজের সময় অবলম্বন করেন, তখন তারা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। যেই সমস্যাগুলোর কারণে তাদের শারীরিক এবং মানসিক বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটায় এবং দৈনন্দিন স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রায় বাধা প্রদান করে। এক্ষেত্রে মেনোপজের সময় নারীদের হরমোনের পরিবর্তনের কারণে যে সকল লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে, তা নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো।
হট ফ্ল্যাশঃ এটি এমন একটি ফ্লাইং যা নারীদের মেনোপজের সময় হরমোন পরিবর্তন হওয়ার কারণে ঘটে থাকে। মেনোপজের সময় নারীদের শরীরে হঠাৎ করে অতিরিক্ত পরিমাণে গরম লাগা ও ঘাম হওয়ার পাশাপাশি শরীরে তীব্র তাপ অনুভব করাই মূলত হট ফ্ল্যাশ নামে পরিচিত। মেনোপজ এর সময় নারীদের শরীরে এটি একবার হলে ৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়াঃ মূলত মেনপজের সময় নারীদের হরমোন পরিবর্তনে হওয়ার কারণে শরীরে আয়নের মাত্রা অধিক হারে কমে যায়, যার ফলে দেখা যায় অনিয়মিত মাসিক হয় এবং ধীরে ধীরে তাদের মাসিক বন্ধ হয়ে প্রজনন ক্ষমতা একেবারে হারিয়ে যায়। এটি মূলত তাদের বয়সের সাথে সাথে হরমোনের পরিবর্তন হওয়ার কারণে ঘটে থাকে।
আরো পড়ুনঃ নিম পাতা গুড়া করার নিয়ম
ঘুমে ব্যাঘাতঃ নারীদের মেনোপজের সময় হট ফ্ল্যাশ হওয়ার কারণে তাদের ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টরেন হরমোন উঠানামা করে। যার ফলে দেখা যায় ঘুমে অধিক বাধাগ্রস্ত হয়।ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টরেন হরমোন মূলত ঘুম নিয়ন্ত্রণ করতে ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে মেনোপজের সময় নারীদের ঘুমে ব্যাঘাত হওয়ার কারণে তারা বিভিন্ন ধরনের মানসিক দুশ্চিন্তার সম্মুখীন হয়ে থাকেন, এটি পরবর্তীতে তাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনের উপর প্রভাব ফেলে।
মেনোপজ যে সকল কারণে হয়
মেনোপজ মূলত নারীদের জীবনের একটি অধ্যায় মাত্র। যেমন একজন মানুষের জীবনে কয়েকটি অধ্যায় আসে শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য, বৃদ্ধ ইত্যাদি। ঠিক এরকমই নারীদের জীবনেরও মেনোপজ একটি অধ্যায়। মূলত প্রতিটা নারীর জীবনে মেনোপজ নামক এই অধ্যায়টি একবার আশে। হয়তো কিছু কিছু নারীর ক্ষেত্রে সঠিক বয়স অনুযায়ী হয়, আবার কিছু কিছু নারীর ক্ষেত্রে সঠিক বয়সের আগে অথবা পরে হয়।
তবে এতে অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করার কোন কারণ নেই, সব নারীর জীবনে মেনোপজ নামক অধ্যায় আসবেই। মোটকথা মেনোপজ নির্দিষ্ট কোন কারণে নারীদের হয় না এটি একটি তাদের জীবনের অধ্যায় মাত্র। তবে এই সময়ে মেনোপজ নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সচেতনতা অবলম্বন করার মাধ্যমে স্বাস্থ্যকরভাবে জীবন যাপন বজায় রাখা সম্ভব।
মেনোপজের পরে কি বাচ্চা হয়
আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে, যে মেনোপজের পরেও কি একজন নারী গর্ভবতী হতে পারবেন বা বাচ্চা নিতে পারবেন? এর উত্তর হলো না, একজন নারী মেনোপজের পরে কোনভাবেই গর্ভবতী হতে পারবেন না বা বাচ্চা নিতে পারবেন না। মূলত এর কারণ হলো একজন নারীর বয়স বাড়ার সাথে সাথে মেনোপজের মাধ্যমে তার হরমোন পরিবর্তন হয়ে যায়, এর সাথে তার শারীরিক স্বাস্থ্যেরও অনেক পরিবর্তন ঘটে।
সর্বোপরি মেনোপজের সময় নারীদের পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে প্রজনন ক্ষমতা একেবারে নিঃস্ব হয়ে যায়। যার ফলে তারা মেনোপযের পরে আর বাচ্চা নিতে পারে না। এছাড়াও অনেক গবেষণায় দেখা যায় যে একজন নারীর মেনোপজ হওয়ার কমপক্ষে পাঁচ থেকে ১০ বছরের মধ্যে সে প্রজনন ক্ষমতার উর্বরতা ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলে, যার ফলে মেনোপজের পরে তাদের বাচ্চা নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হয় না।
মেনোপজের সময় যৌবনের উপর যে প্রভাব পড়ে
মেনোপজের সময় নারীদের হরমোনের পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে, যার মধ্যে অন্যতম একটি হলো যৌনতার আগ্রহ কমে যাওয়া। মূলত মেনোপজের সময় নারীদের যৌন মিলনের আগ্রহ কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো এই সময়ে তাদের মেনোপজ চলার কারণে হরমোনের ভারসাম্য প্রভাবিত হতে থাকে।
আর এই হরমোন প্রভাবিত হওয়ার কারণে শরীরের শুষ্কতার হার আগের থেকে অধিক হারে বেড়ে যায়। সাধারণত এই সময়ে শরীর শুষ্কতার কারণে তাদের যোনিপথে অতিরিক্ত শুষ্কতা অনুভব হয়। যার ফলে তাদের যৌন কার্যকলাপ এবং আকাঙ্ক্ষা ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে। যা তাদের জীবনের উপর প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
মোটকথা মেনপাজের সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে নারীদের যোনিপথে অতিরিক্ত শুষ্কতা দেখা দেয়, যার ফলে তাদের আগের থেকে যৌন আকাঙ্ক্ষা অনেকটাই কমে যায়। তবে এটি সহজে চিকিৎসা জনিতএকটি সমস্যা। তাই মেনোপজের সময় যদি এধরনের কোন সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে তাহলে Menopause মানে কি যৌবনের শেষ বিদায় এই বিষয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসাকে পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
মেনোপজ পরবর্তী চিকিৎসা
মেনোপজ হলো নারীদের জীবনের এমন একটি সময়, যেই সময়টিতে তাদের হরমোনের ফির একবারে শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের মাসিক একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। মূলত এই মেনপজের সময় নারীরা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। যেমন সব সময় শরীরের মধ্যে দুর্বলতা কাজ করে অস্থিরতা অনুভব করা, ঘুমে ব্যাঘাত হওয়া এবং মাথা ঝিমঝিম করা ইত্যাদি।
সাধারণত আমরা জানি মেনোপজের সময় নারীদের ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যাওয়ার ফলে এ সকল সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, তবে এই সময়ে তাদের শরীরে এফ এস নামে আরো একটু হরমোন বেড়ে যায়, যার ফলে এর প্রভাব কিছু কিছু সময় আরো বেশি দেখা যায়। এক্ষেত্রে এই সময়ে নারীদের হরমোনের বিভিন্ন পরীক্ষা যেমন ইউট্রাস্ট, আলট্রাসনোগ্রাফি এ ধরনের পরীক্ষা করে হরমোন বিষয়ে আগে থেকেই সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।
বিশেষ করে এই সময়ে খেয়াল রাখতে হবে মেনোপজের পর নারীদের জীবনযাত্রা কেমন হবে, মেনোপজ তাদের জীবনে কি কি ধরনের পরিবর্তন এনে প্রভাব ফেলবে এবং Menopause মানে কি যৌবনের শেষ বিদায় এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
মেনোপজের পরে নারীদের জীবন যাত্রার পরিবর্তন
মেনোপজের পরে নারীদের সুস্থতা নির্ভর করে সম্পূর্ণ তার জীবনযাত্রার ওপর। কেননা মেনোপজের সময় নারীদের জীবনে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক এবং মানসিক চাপ আসে, যে চাপগুলো তাদের দৈনন্দিন জীবনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি মানসিক চাপ প্রয়োগ করে যে বিষয়টি তা হল, অনেক নারীই মনে করেন, যে আমার মাসিক একেবারে বন্ধ হয়ে গেল, এ বিষয় নিয়ে সে ডিপ্রেশনে থাকে, সে মনে করে তার সব কিছু শেষ হয়ে গেছে শূন্যতা অনুভব করে।
আরো পড়ুনঃ জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
তাই এই সময়ে প্রত্যেকটা পরিবারের উচিত নারীদেরকে মানসিক সাপোর্ট দেওয়া। তাদের কথাগুলো শোনার এবং বোঝার চেষ্টা করা, তাদের পাশে থাকা। এছাড়াও মেনোপজে নারীদের মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি খাদ্যভাসের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কেননা মেনোপজ এর জন্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারীদের শরীর অতিরিক্ত মোটা হয়ে যায় আবার কিছু ক্ষেত্রে শরীরে অতিরিক্ত ওজন কমে যায়।
তাই এই সময়ে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করা, নিয়মিত ব্যায়াম যেমন হাঁটাচলা করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মেনোপজ বিষয়ে সচেতনতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মোটকথা মেনোপজের পরে নারীদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অবলম্বন করাই তাদের সুস্থ থাকার জন্য প্রধান কার্যকরী উপায়।
লেখকের শেষ কথা
মেনপজ মানেই নারীদের যৌবনের শেষ বিদায় না। তবে মেনোপজের সময় তাদের যোনি শুষ্কতার কারণে যৌন আকাঙ্ক্ষা কিছুটা কমে যায়। তবে এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে ওই নারীর উপর এবং তার বয়স অনুযায়ী। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি Menopause মানে কি যৌবনের শেষ বিদায় এ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এরকম আরও মেনপজ বিষয়ক তথ্য জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।37912
বাংলা লিপির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url