কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও উপকারিতা
রমজানে কুরআন তেলাওয়াতের ৭ ফজিলতকুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই ভালো করে জানেন না। এই মহান কিতাব তেলাওয়াত করার অনেক ফজিলত রয়েছে। এই বিষয়ে কিছু না জানলে নিতে পারেন।
মহান রাব্বুল আলামীনের মনোনিত কিতাব আল কুরআন তেলাওয়ার করার রয়েছে অনেক ফজিলত। মহানবি হযরত মুহাম্মদ সা. এর উপর এই কিতাব নাজিল হয়। তাই চলুন জেনে নিই কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও উপকারিতা সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্র : কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও উপকারিতা
- কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও উপকারিতা
- রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত
- কুরআন তিলাওয়াত করা কি ফরজ
- রমজানে কুরআন খতম দিলে কি হয়
- কুরআন শরীফ না পড়লে কি হয়
- রমজানে কিভাবে কুরআন পড়তে হয়
- কুরআন শেখানো ফজিলত কি
- কুরআন শিক্ষার গুরুত্ব
- কুরআন অর্থ কি
- লেখকের শেষ মন্তব্য
কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও উপকারিতা
কুরআন আল্লাহর বাণী। এই কিতাব নাজিল হয়েছে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. এর উপর। পবিত্র রমজান মাসে হেরা গুহায় ধ্যান মগ্ন থাকা অবস্থায় এই কুরআন নাজিল হয়। সারা বিশ্বের মুসলিমরা এই কিতাব অনুসরণ করে থাকে। মহান এই কিতাব আজ থেকে ১৪৫০ বছর এর বেশী সময় আগে নাজিল হলেও আজ পর্যন্ত এই কিতাবের একটি হরফ ও বিকৃত হয়নি। সম্পূর্ণ অবিকৃত এই কিতাবে রয়েছে মহান রাব্বুল আলামীনের নানা আদেশ। এই কিতাবে বর্ণিত হয়েছে আমাদের সারা জীবনের কর্মকান্ড। সকল কিছু সম্পর্কে আমরা এই কুরআন থেকে জানতে পারি। এই কিতাবের মতো করে আজ পর্যন্ত কোনো কিতাব সংকলন করা সম্ভব হয় নি। ছোট থেকে বড় আকারের মোট ৬৬৬৬ টি (মতভেদ অনুযায়ী ৬৬৬৭ টি) আয়াত রয়েছে এই পবিত্র কুরআনুল কারীমে। চলুন কুরআন পাঠ করার ফজিলত গুলো দেখে নিই।
- কুরআনুল কারীমে বর্ণিত হয়েছে, " যে সকল বান্দা কুরআন তেলাওয়ার করে, নামাজ পড়ে ও আমি তাদের কে যে রিযিক দিয়েছি তা ব্যয় করে গোপনে ও প্রকাশ্যে। তারা এমন ব্যবসার আশাবাদী যেখানে কখনো লোকসান নেই। যাতে আল্লাহ তাদের কে পূর্ণ প্রতিদান দেন ও তারা নিজ অনুগ্রহে দান করে। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।" ( সূরা ফাত্বির, আয়াত সংখ্যা ২৯ ও ৩০)। অর্থাৎ আপনি যদি কুরআন তেলাওয়াত করেন তাহলে আল্লাহর বরকত আপনার উপর নাজিল হবে। আপনার প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ বাড়াবে। তাই বেশী কুরআন তেলাওয়াত করুন।
- হাদিসে এসেছে, আমির ইবনে ওয়াসিলা আবু তুফায়েল রা. থেকে বর্ণিত, " আবদুল হারিস রা. উসফান নামক স্থানে উমর রা. এর সাথে মিলিত হলেন। উমর রা. তাকে মক্কার গভর্নর করেছিলেন। উমর রা. তাকে বললেন, গ্রামবাসী বেদুইনের জন্যে তুমি কাকে খলিফা বানিয়েছো? তিনি বললেন, ইবনে আবযা রা. কে। উমর রা. বললেন, তিনি কে? তিনি জবাব দিলেন, সে আমাদের আযাদকৃত গোলাম। তখন উমর রা. বললেন, তুমি গোলাম কে কেন খলিফা বানিয়েছো? তিনি বললেন, সে আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করে। ইলমে ফারায়াজ সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও কাযী। তখন উমর রা. বলেন, নবি করীম সা. বলেছেন, আল্লাহ এই কিতাবের মাধ্যমে কিছু মানুষ কে উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন ও কিছু মানুষ কে অবনমিত করেছেন। "( ইবনে মাজাহ, হাদিস সংখ্যা ২১৮)।
- হাদিস শরীফে এসেছে, আলী ইবনে তালীব রা. থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমাদের মাঝে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি যে কোরআন শিখে ও তা অন্য কে শেখায়।" তাই আপনি কুরআন শেখার মাধ্যমে ভালো মানুষ হতে পারবেন। পাশাপাশি কুরআন পড়া অন্য কেও শিখাবেন।
- হাদিসে এসেছে,আবদুল্লাহ ইবনে মাসুদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন "রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করবে। সে নেকি লাভ করবে। আর প্রতিটি নেকি ১০ গুণ করে বৃদ্ধি পাবে। "( তিরমিজি, হাদিস সংখ্যা - ২৯১০)। তাই আপনি যদি কুরআনের একটি হরফ উচ্চারণ করেন তাহলে ১০ নেকি পাবেন।
- কুরআন হলো আল্লাহর পবিত্র কালাম। এটি তিলাওয়াত করলে আল্লাহর রহমতে আচ্ছাদিত হওয়া যায়। যারা কুরআন পড়ে শিক্ষা গ্রহণ করে, হেদায়েত প্রাপ্ত হয়, আল্লাহ তাদের উপর অনেক খুশি হয়। তাদের উপর আল্লাহ বিশেষ রহমত বর্ষণ করে। তাদের অন্তরে আল্লাহ প্রশান্তিতে পরিপূর্ণ করে দেয়। আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত, " রাসুল সা. বলেন, আর যারা আল্লাহর ঘরে একত্রিত হয়ে কিতাব তেলাওয়াত করে ও পারস্পরিক কুরআনের চর্চা করে, তাদের প্রতি 'সাকীনা' তথা এক বিশেষ প্রশান্ত বর্ষিত হয়। রহমত তাদের কে আচ্ছাদন করে নেয়। আল্লাহ তার কাছের ফেরেশতাদের সাথে তাদের নিয়ে আলোচনা করে।" ( সহীহ মুসলিম, হাদিস সংখ্যা - ২৬৯৯)।
- হাদিস এসেছে, আয়শা রা. থেকে বর্ণিত, " রাসুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, যারা উত্তম রূপে কুরআন পড়বে, তারা অগণিত ফেরেশতাদের সাথে থাকবে। আর যার কুরআন পড়তে গিয়ে কষ্ট হয়, আটকে যায়, তার জন্যে রয়েছে দ্বিগুব সাওয়াব। ( সহিহ মুসলিম, হাদিস সংখ্যা - ৭৯৮)। এই হাদিসে রাসুল সা. দুই ধরণের ব্যক্তিদের কথা বলেছেন। যারা কুরআন সুন্দর ভাবে তিলাওয়াত করতে পারে আর যারা কষ্ট করে তিলাওয়াত করে। কুরআন তিলাওয়াত কারী ব্যক্তিরা অগণিত ফেরেশতাদের সাথে থাকবে আর যে কষ্ট করে আস্তে আস্তে কুরআন পড়ে বা চেষ্টা করে তার জন্যে রয়েছে দ্বিগুন সওয়াব।
কুরআন তেলাওয়াত করার রয়েছে অনেক উপকারিতা। আপনি যদি কুরআন তেলাওয়াত করেন তাহলে আল্লাহর নেয়ামত আপনার উপর থাকবে। কুরআন তেলাওয়াত করার ফলে আপনি সঠিক পথের সন্ধান পাবেন। আপনার জীবন কিভানে পরিচালনা করবেন তার বিশদ বর্ণনা রয়েছে এই কুরআনে। কুরআন তেলাওয়ার করার ফলে ইমান বৃদ্ধি পায়। আপনি বেশী বেশী যদি কুরআন তেলাওয়াত করেন তাহলে আপনার ইমানি শক্তি অনেক দৃঢ় হবে। কুরআন তেলাওয়াত করার ফলে অন্তর হয় প্রশান্ত। অশান্ত ও হতাশাগ্রস্ত আত্মার প্রশান্তি তে কুরআন তেলাওয়াতের বিকল্প নেই। আপনি যদি কুরআন তেলাওয়াত করেন বা শুনেন তাহলে হৃদয় প্রশান্তিতে ভরে যায়।
পরকালে ভালো কিছু অর্জন করার জন্যে কুরআন তেলাওয়াত করা অপরিহার্য। আপনি কুরআন তেলাওয়াত করলে আল্লাহর কাছাকাছি চলে আসবেন। এর ফলে ইহকালে আপনার মন শান্তিতে থাকবে৷ তাছাড়া কেয়ামতের দিন কুরআন তেলাওয়াতকারীদের জন্যে কুরআন সুপারিশ করবে।
আরো পড়ুন : রোজার সময় কখন সহবাস করবেন জানুন
হাদিসে এসেছে, রাসুল সা. বলেছেন, " তোমরা কুরআন তেলাওয়াত কর, কারন কেয়ামতের দিন কুরআন সুপারিশ করবে।" (মুসলিম)। যে ব্যক্তি কুরআনের বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে সে ব্যক্তি সফল হবে। কুরআন তেলাওয়াত করা জান্নাত লাভের অন্যতম মাধ্যম। তাই বেশী বেশী কুরআন তেলাওয়াত করুন।
রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত
কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছেন। রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াত করার অনেক ফজিলত রয়েছে। এই রমজান মাসে কুরআন নাজিল হয়। রমজান মাসেই কুরআন নাজিল করা হয়েছে মানব জাতির হেদায়েতের জন্যে। আপনি যদি রমজান মাস ছাড়া কুরআন তেলাওয়াত করেন তাহলে আপনার ১০ নেকি করে আসবে প্রতি হরফে। আর রমাজন মাসে কুরআন তেলাওয়াত করলে ১০ গুণ বৃদ্ধি থেকে শুরু করে আল্লাহ তাকে যত ইচ্ছা সাওযাব দান করেন। আল্লাহ বলেন, " রোজা আমারই জন্যে। এর পুরুস্কার আমি নিজেই দিবো। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময়ে সাওয়াব দশ গুণ বৃদ্ধি করবে।" তাই রমজান মাসে বেশী বেশী কুরআন তেলাওয়াত করবেন।
কুরআন পড়ার পাশাপাশি এর অর্থ গুলে বুঝার চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ বলেন, " আমি কুরআন নাজিল করেছি আরবি ভাষায়, যেন তোমরা তা বুঝতে পারো।" (১২:১২)। মহান আল্লাহ তায়ালা কুরআন নাজিল করেছেন রমজান মাসে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, " রমজান সেই মাস, যে মাসে কুরআন নাজিল করা হয়েছে মানবজাতির হেদায়েতের জন্যে এবং তাতে রয়েছে সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য বিধান।" ( সূরা বাকার, আয়াত সংখ্যা - ১৮৫)। সুতরাং কুরআন কে নাজিল করা হয়েছে রমজান মাসে। তাই এই মাস বরকতময় ও সম্মানিত।
কুরআন তিলাওয়াত করা কি ফরজ
কুরআন নাজিল হয়েছে সমগ্র মানবজাতির জন্যে। এটি পৃথিবীর সকল মানুষ তিলাওয়াত করতে পারবে। কোরআন সবার জন্যই পড়া ফরজ। কুরআন শিক্ষা নেওয়া ফরজ। আমাদের শিক্ষা গ্রহণের উৎস হলো কুরআন।
আরো পড়ুন : পিরিয়ডের কত দিন পর কুরআন পড়া যায়
কুরআন হলো আমাদের এক মাত্র গাইডলাইন। কুরআনের শিক্ষা গ্রহণ করা ফরজ। আর এটিও তেলাওয়াত করাও ফরজ। পাশাপাশি আরবি গুলো বাংলায় অনুবাদ করে বুঝে নিতে হবে। বুঝে বুঝে যদি পড়তে পারেন তাহলে আল্লাহ অনেক খুশি হবেন। পৃথিবীর সমগ্র মানবজাতির জন্যে কুরআন তিলাওয়াত করা ও কুরআন শিক্ষা নেওয়া ফরজ।
রমজানে কুরআন খতম দিলে কি হয়
রমজান মাসে অনেকেই কুরআন খতম করে থাকেন। অনেক প্রসিদ্ধ ব্যক্তিগণও কুরআন খতম দিয়েছে। পবিত্র রমজান মাসেই এই পবিত্র কুরআন নাজিল হয়েছে। তাই এই মাসে বেশী বেশী কুরআন খতম দেওয়ার চেষ্টা করুন। ইমাম আবু হানিফা ১ রাতে ১ খতম ও এক মাসে ৬০ খতম দিতেন বলে বর্ণনা পাওয়া গিয়েছে। ইমাম মুহাম্মদ ইবনে তাইমিয়া রহ. জেলখানায় ৮০ তম কুরআন খতম দেওয়ার সময় শাহাদাত বরণ করেন।রমজানে কুরআন খতম দিলে অনেক সাওয়াব পাওয়া যায়। তাই আপনি চেষ্টা করুন কুরআন খতম দেওয়ার।
কুরআন শরীফ না পড়লে কি হয়
কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছেন। একজন মুসলিম হিসেবে আপনার কুরআন শিক্ষা নেওয়া ফরজ। কুরআন না শিখলে আপনার গুনাহ হবে। কুরআন পরকালে আমাদের জন্যে পুলসিরাত পারাপার হওয়ার সুপারিশ করবে। আপনি যদি কুরআন না শিখেন তাহলে এই সুপারিশ থেকে বঞ্চিত হবেন। প্রত্যেক নর- নারীর উপর ফরজ একটি কাজ হলো এই কুরআন শিক্ষা নেওয়া। তাই বয়স যেখানেই পৌঁছে যাক না কেন, আপনাকে কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
আপনি যদি কুরআন না শিখে থাকেন তাহলে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হবেন। আল্লাহর রহমত পাওয়ার জন্যে হলেও আপনাকে কুরআন শিখতে হবে। কুরআন শেখার ফলে অনেক সাওয়াব লাভ করা যায়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. এর জীবন চরিতই ছিল এই কুরআন। তিনি তার উম্মতদের কে কুরআন চর্চা করার নির্দেশ দিয়েছে। তাই বেশী কুরআন তেলাওয়াত করুন, কুরআন শিখে। না হলে কুরআন তেলাওয়াতের সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হবেন।
রমজানে কিভাবে কুরআন পড়তে হয়
কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছেন। রমজান মাসে অনেকেই কুরআন খতম দিতে চান। তাই আপনি কিছু উপায়ে খুব সহজেই কুরআন খতম দিতে পারেন। প্রথমত, আপনি প্রতিদিন প্রত্যেক নামাজের পর ৪ পৃষ্ঠা করে কুরআন তেলাওয়াত করতে পারেন। এভাবে তেলাওয়াত করার ফলে দৈনিক আপনি ২০ পৃষ্ঠা কুরআন তেলাওয়াত করে নিতে পারবেন। এর ফলে আপনার খুব বেশী সময়ের প্রয়োজন হবে না। প্রতিনিয়ত এই ভাবে তেলাওয়াত করলে আপনার খুব সহজেই ৩০ পারা কুরআন খতম দেওয়া হয়ে যাবে।
আপনি যদি চান যে কুুরআন দুইবার করে খতম করবেন তাহলে আপনাকে প্রতি নামাজের শেষে ৮ পৃষ্ঠা করে কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন। ফলে প্রতিদিন আপনার ২ পারা করে কুরআন পড়া হয়ে যাবে। আর এই ভাবেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে আপনি পুরো রমজান মাসে দুই বার কুরআন খতম করে ফেলতে পারবেন।
আরো পড়ুন : রোজা অবস্থায় সপ্নদোষ হলে গোসলের নিয়ম
আবার আপনি যদি চান তিন বার কুরআন খতম দেওয়ার জন্যে। তাহলে তাও সম্ভব হবে। এর জন্যে আপনি দৈনিক দেড় ঘন্টা সময় বের করবেন। প্রতি ৩০ মিনিটে আপনি এক পাড়া করে কুরআন খতম দিতে সক্ষম হবেন। তাই এই ভাবে চেষ্টা চালিয়ে গেলে আপনি খুব সহজেই তিন বার কুরআন খতম দিয়ে দিতে পারবেন।
প্রতি সপ্তাহে যদি কুরআন খতম দিতে চান তাহলে তা আরো ভালো। এই ভাবে আপনি পুরো রমজান মাসে চার খতম দিতে পারবেন। প্রতি সপ্তাহে কুরআন খতম দেওয়ার জন্যে আপনি কুরআন কে সাত ভাগে ভাগ করে নিতে পারেন। তারপরে সাত দিনে তিলাওয়াত করতে পারেন। এই ভাবে পূর্বসরীগণরা কুরআন খতম দিতেন। তারা প্রথমে কুরআনের প্রথম তিনটি সূরা, তারপর মধ্যবর্তী পাঁচটি সূরা, পরে সাতটি সূরা, নয়টি, এগারটি, তেরটি ও শেষে সূরা ক্বফ থেকে নাস পর্যন্ত পাঠ করতেন। তাই এই ভাবেও বা প্রতিদিন ২০ পৃষ্ঠা করে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেন।
কুরআন শেখানো ফজিলত কি
মানজাতির জন্যে চূড়ান্ত গ্রন্থ হলো আল কুরআন। যারা কুরআনের ইলম মানুষ কে শিক্ষা দেয় ও প্রচার করে তাদের ফজিলত অনেক। হাদিসে রাসুল সা. বলেছেন, কুরআন শিক্ষাদানকারী ব্যক্তি কে মুসলমানের মধ্যে সর্বোত্তম ও শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলে উল্লেখ করেছেন। ওসমান রা. থেকে বর্ণিত," রাসুল সা. বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি যে নিজে কুরআন শিখে ও অন্য কে তা শিক্ষা দেয়। " (সহিহ বুখারি, হাদিস সংখ্যা - ৫০২৭)। তাই কুরআন শেখানোর অনেক ফজিলত রয়েছে। আপনি নিজে কুরআন শিখুন ও অন্য কে তা শেখানোর চেষ্টা করুন।
কুরআন শিক্ষার গুরুত্ব
একজন মুসলিম হিসেবে আপনার কুরআন শিক্ষা নেওয়া একটি ফরজ কাজ। তাই আপনার উচিত কুরআন শিক্ষা গ্রহন করা। আপনি যদি কুরআন শিখেন তাহলে সেই অনুযায়ী নিজের জীবন কে পরিচালনা করতে পারবেন। কুরআনে বর্ণিত রয়েছে, আমাদের জীবন পরিচালনা করার সকল দিক সমূহ। এখানে আখেরাতে কিভাবে শান্তিময় জীবন লাভ করা যায় আর ইহকালেও কিভাবে ভালো মানুষ হিসেবে থাকা সে সকল কিছু এখানে বর্ণিত রয়েছে। তাই কুরআন শিক্ষা আপনার জন্যে একটি অত্যাবশ্যক একটি কাজ।
কুরআন অর্থ কি
কুরআন শব্দের অর্থ হলো যাহা পঠিত হয়। পবিত্র কুরআন রমজান মাসে নাজিল হয়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. যখন হেরা গুহায় ধ্যান মগ্ন ছিলেন তখন এই কিতাব নাজিল করা হয়। এই কুরআনে ১১৪টি সূরা ও ৬৬৬৬ টি মতান্তরে ৬৬৬৭ টি আয়াত রয়েছে। কুরআনের সবচেয়ে বড় সূরা হলো সূরা আল বাকারা। এর আয়াত সংখ্যা হলো ২৮৬ টি। আর সবচেয়ে ছোট সূরা হলো সূরা আল কাউসার। কুরআনের প্রথম সূরা হলো সূরা ফাতিহা। এটি প্রত্যেক রাকআতে পাঠ করা হয়। আর শেষ সূরা হলো সূরা আন নাস।
লেখকের শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠকগণ, আজকের আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে, কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও উপকারিতা সম্পর্কে। আশা করি সকল বিষয় গুলো উপলব্ধি করতে পেরেছেন। কুরআন প্রত্যেক মুসলমানের জন্যে একটি অত্যাবশ্যক প্রক্রিয়া। তাই এটি কে আমাদের হৃদয়ে, মনপ প্রাণে ধারণ করতে হবে। বিষয়টি ভালো লাগলে এটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। 250109
বাংলা লিপির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url